রাজাকার আব্দুল হামিদের নির্যাতনের কথা মনেপড়ে হতিয়াড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের

0
947
হামিদ রাজাকার
রাজাকার হামিদ গোপালঞ্জ

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া ও সিংঙ্গে ইউনিয়নে একাত্তরে খুন,ধর্ষণ,লুট ও বাড়ী ঘর জালিয়ে দেওয়ার অন্যতম হোতা হাতিয়াড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মাওলানা হামিদ ওরফে হামিদ রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও জনগনের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে বলেন, স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধদের ভয়ে ঐ রাজাকার দীর্ঘদিন লুকিয়ে ছিল এবং নিজেকে আড়াল করার জন্য অনেক মুক্তিযোদ্ধদের হাত পা ধরে ক্ষমা চেয়ে গোপালগঞ্জে বসবাস করে। কুক্ষ্যাত রাজাকারের বিরুদ্ধে ৫০বছরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ৭৫-এর পট পরিবর্তনের পর পর আব্দুল হামিদ সমাজে বিশিষ্ট ব্যক্তি বনে যায়। গ্রামে বিচার শালিশ থেকে সব অনুষ্ঠানে চলে তার অবাধ যাতায়াত। এর সুবাদে গোপালগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাকতার চাকুরী পায়। হামিদ রাজাকার একাত্তরে ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা, পিচ কমিটির আঞ্চলিক নেতা ,জামাত ইসলামের গোপালগঞ্জের সভাপতি, বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাতের উপদেষ্টা ও অর্থ দাতা।

একাত্তরে খুন,ধর্ষণ,লুট ও বাড়ী ঘর জালিয়ে দেওয়াই তার একমাত্র কাজ ছিল। রাজাকার হামিদ যুদ্ধের সময় লুট পাটের মাধ্যমে গ্রামবাসী ও পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হয়।
এই পাষান্ড রাজাকার কে ঐ সময় স্বচক্ষে দেখা ঘটনা বর্ননা করেছেন হাতিয়াড়া গ্রামের মৃত বনমালী বিশ্বাসের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা বীমল বিশ্বাস একই গ্রামের অবনী বিশ্বাসের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা হরিদাস বিশ্বাস ও একই গ্রামের অহেদুজ্জামানের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুল মোল্যা। তারা বলেন ১৯৭১ সালে পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে পাকিস্তানী আর্মিদের নিয়ে সাতপাড় খেয়াঘাট হয়ে ট্রালার যোগে সিংঙ্গে, হাতিয়াড়া হয়ে পুইশুর আসে।

নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে পাকসেনাদের সমানে সমাজ সেবক অতুল কৃষ্ণ মজুমদার কে হত্যা করে এবং পুইশুর থেকে ফেরার পথে সিংঙ্গে গ্রামের হরিবর বিশ্বাসকে বাড়ী থেকে ডেকে এনে পাকসেনাদের সমানে গুলি করে হত্যা করে। তারা আরো বলেন, হামিদ রাজাকার একাত্তরে প্রকাশ্যে অস্ত্র কাধে নিয়ে তার সহযোগী নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়াত। এবং নিজ হাতে পাকিস্তানী আর্মিদেরও সামনে অনেক বাড়ীতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ব্যপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোক্তার হোসেন ও উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এনায়েত মিয়া বলেন,একাত্তরে আব্দুল হামিদ রাজাকার ছিল এবং কোটালী পাড়ায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রাণ নাষের চেষ্টায় বোমাপোতা মামলায় ৯মাস হাজত বাসকরে।

অভিযুক্ত মাওলানা আবদুল হামিদ এর কাছে বিষয় গুলি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীদের পক্ষে থাকলেও আমি দেশে কোন ক্ষতি করি নাই। কোটালী পাড়ায় মাননীয় প্রধান মন্রীর প্রাণ নাষে বোমাপোতা মামলায় আমি বেকসুর খালাস পাই।

জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট স্থানীয় সকল মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে সকল শক্তি এই ৭১ এর ঘাতক রাজাকার আব্দুল হামিদের বিচারের দাবি জানায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here